এলার্ম বেজে উঠলো এলার্মের শব্দে ঘুম ভেঙে যায় তামান্নার। চোখ কষলিয়ে মোবাইলের স্ক্রিনে চোখ পড়তেই লাফ দিয়ে বিছানা ছাড়লো। এই যা সকাল দশটায় ক্যাম্পাসে যেতে হবে নয়টা বাজে এখন তড়িঘড়ি করে রেডি হয়ে রওনা হলো। বাসভর্তি লোকজন একটু বসতেও পারছে না তামান্নার স্টেশন চলে এসেছে। তামান্নার গাড়ি থেকে নামতেই একটি ট্রাক এসে ধাক্কা দেয় তামান্নাকে চিৎকার দিয়ে জ্ঞান হারায় তামান্না। কিছুক্ষণ পর জ্ঞান ফিরলে তামান্না দেখতে পায় তাকে ঘিরে আছে লোকজন একটু ঘাড় নাড়তেই দেখতে পেল তো একটি মেয়ের বডি পড়ে আছে।
আজকের আলোচনা :
- কবরের আজাব সম্পর্কে ঘটনা।
- কবরের আজাব pdf।
- কবরের আজাব কেমন হবে।
- কবরের আজাব মুভি।
- কবরের আজাব থেকে মুক্তির উপায়।
- কবরের আজাব সম্পর্কে আয়াত।
- ভয়ঙ্কর কবরের আজাব।
- কবরের আজাব সম্পর্কে হাদিস।
একি ? এ তো দেখছি আমারই লাশ। কিছুই বুঝতে পারছিল না তামান্না। লোকজন ধরাধরি করে লাশটাকে পুলিশের গাড়িতে তুলে দিল। তামান্নাও কোন মস্তিষ্কে পুলিশের গাড়িতে উঠে বসল। তার সে নিজ টের পায়নি। গাড়িতে ওঠার পর পুলিশদের একে অপরের কথা শুনে তামান্না বুঝতে পারল যে সে আর দুনিয়াতে বেঁচে নেই। তামান্নার লাশ হাসপাতালের মর্গে রাখা হল। লাশটির পাশেই বসে বসে ভাবছে তামান্না। হঠাৎ তামান্নাকে পেলো তার মা বাবার ছোট বোন অধরা এবং ভার্সিটির বন্ধু বান্ধব সবাই লাশের পাশে এসে হাউমাউ করে কাঁদতে শুরু করে।
তামান্না তার মায়ের কাছে গিয়ে ডাকে মা মা ও মা মাগো কিন্তু না। তামান্নার ডাক তার মা শুনতে পায় না। এরপর বাবার কাছে যায়। কিন্তু বাবাও শুনতে পায় না তামান্নার আকুতি ভরা কন্ঠে বাবা বাবা ডাক । কেমন যেন পাষাণ হৃদয়ের মানুষ তার বাবা। এভাবে বোনকে ডেকেও যখন সাড়া পায় না। তখন বুঝতে পারল তার কথা কেউ হয়কো শুনতে পারছে না। লাশ বাড়িতে নিয়ে আসা হলে তামান্না দেখলো তার দাদি মারা যাওয়ার পর বাড়িতে যা যা হয়েছিল ঠিক তাই ঘটছে আজ তামান্না খুব ভয় পেয়েছে লাশ কবরে নেওয়ার জন্য যখন লোকজন খাটে নিয়ে আসলো ভীষণ ভয়ে কাতর হয়ে আছে তামান্না। এই খাটে করে তার দাদিকে কবর স্থানে নেওয়া হয়েছিল আজ তাকে নিবে এটা ভাবতেই খুব ভয় হচ্ছিল তামান্নার। বাড়ি ভর্তি পাড়ার লোকজন লাশ গোসল করানোর পর কাফনে মরিয়ে দিল মহিলারা এসে দেখে যাচ্ছে তামান্নার লাশের মুখ। এদিকে মা কাঁদতে কাঁদতে বেহুশ হওয়ার অবস্থা।
এই পরিস্থিতি এবং তাকে কবরে নেওয়া হবে। ভাবতেই শরীর শিউরে উঠেছে তামান্নার। তামান্নার বাবা চাচাতো ভাইয়েরা লাশবাহী খাট কাঁধে তুলে কবরস্থানের দিকে রওনা দিল। তামান্না যেতে না চাইলেও তাকে যেতে হচ্ছে। দাদির কবরের পাশেই তামান্নার কবর খনন করা হয়েছে। কবরে চোখ পড়তেই ভয়ে আতকে উঠে তামান্না। হাতে হাতে লাশ কবরে নামানো হল। যেতে না চাইলেও তামান্না কবরের ভিতরের মধ্যে ঢুকে পড়ল। এদিকে বাঁশের টুকরো আর বাঁশের বেড়া দিয়ে কবর ঢেকে মাটি দেওয়া শুরু হয়েছে।
কবর আস্তে আস্তে অন্ধকার রূপ ধারণ করছে। তামান্না হাউমাউ করে চিৎকার করে কাঁদছে। কিন্তু কেউই শুনছে না তামান্নার কান্নার আওয়াজ। লোকজন কবর থেকে দূরে যেতেই তামান্না দেখতে পেল মনকার নাকের ফেরেস্তা হাজির তামান্নাকে ঝটপট তিনটি প্রশ্ন ছুঁড়ে দিল। বলল
- তোমার রব কে?
- তোমার দিন কি?
- তোমার নবী কে?
দৈনিক পাঁচওয়াক্ত নামাজে তিনশো বাহান্ন বার রব শব্দটি উচ্চারিত হয়। পাঁচ ওয়াক্ত নামায দূরের কথা তামান্না নামাজও পড়তো না।
জীবনে কোনদিন ওয়াজ মা ফেলে যায়নি। মোট কথা ধর্মের কথা শুনেনি। আর আমাদের নবী হজরত মহম্মদ আদর্শ, তাঁর সুন্নত জীবনও পালন করেনি। তাই তামান্নার তিনটি প্রশ্নের একটিরও জবাব দিতে পারেনি। চারিদিকে অন্ধকার, হঠাৎ তামান্না খেয়াল করলো নরম কিছু একটা তাকে পেঁচিয়ে ধরছে। ঘাড়ের দিকে কিছু একটি বেয়ে বেয়ে যাচ্ছে। তামান্নার বুঝতে আর বাকি রইলো না যে তাঁর শরীর সাপে পেঁচিয়ে ধরেছে৷ আর ঘাড়ের দিকে বিচ্ছু ধ্বংসনে তামান্না চিৎকার করছে শুধু আজাব , চিৎকার আর চিৎকার তামান্নার মৃত্যুর একদিন পর তামান্নার ছোট বোন অধরা তামান্নাকে স্বপ্ন দেখল। তামান্নার আজাবের ভয়াবহতা। অধরা স্বপ্নের কথা জানালো তার মা এবং বাবাকে। মা বাবা কবরের আযাব থেকে মেয়েকে মুক্ত করার জন্য যা যা করা দরকার করলেন। দোয়া, দান শ্রদ্ধা এতিম খাওয়ানো নিজেরাও পরিবর্তন আনলো। কিন্তু তামান্নার আজাব বন্ধ হচ্ছে না।
তামান্না ফেরেশতাকে কারণ জিজ্ঞেস করে ফেরেশতারা বলে তোমার সব গুনাহ ক্ষমা করে দেওয়া হয়েছে। কিন্তু একটি গুনাহের কারণে আজাব ক্ষমা হচ্ছে না। আর তা হল দুনিয়াতে থাকা অবস্থায় তুমি ফেসবুকে তোমার বেপর্দা ছবি আপলোড দিতে। তোমার সেই ছবি দেখে আজও কত যুবক জাহারনামে হচ্ছে। তুমি কি জানতে না? যে একবার বেপর্দা হলে কমপক্ষে সাত হাজার বছর জাহান্নাম। তামান্নার ফেসবুক পাসওয়ার্ড অন্য কেউ জানতো না। তাই ছবিগুলো ডিলিট করা হয়নি।
আর আজাব বন্ধ এই মুহূর্তে একটা শব্দ আসলো তার কানে কিরে আর কত ঘুমাবি নয়টা বাঁচতে চললো মায়ের ডাকে ঘুম ভাঙলো তামান্নার ঘুম থেকে উঠে চোখ কষল মোবাইলটা হাতে নিলো রাতের দেখার স্বপ্ন বেশ ভয় পেয়েছে। তামান্না মোবাইল নিয়ে ফেসবুক আইডি লগইন করল একে একে ডিলেট করে দিলো সমস্ত আপলোডকৃত ছবিগুলো। আল্লাহ আমাদের সকল ভাই বোনকে হেফাজত করুন আমীন।